দালালমুক্ত বাংলাদেশ গঠন করতে হবে

নির্দোষ লোককে শাস্তি দেয়া কে মানবতার খুন বলা হয়। ব্যক্তিগত পছন্দ থেকে যেকোনো একটা মানুষ যেকোনো দল করতেই পারে। সেই দল করে যখন সেই মানুষটি দিনের পর দিন সেও তার পরিবার ক্ষমতাধরদের কাছ থেকে অত্যাচার অনাচার ও নিজেদের শিকার হয় এমনকি ব্যক্তিসহ পরিবারটির সর্বস্ব কেড়ে নেয়া হয় তখন যখন বাধ্য হয়ে কোন বিচার না পেয়ে মানুষটির দল থেকে পদত্যাগ করে তখনো কি তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্রের খেলায় মত্ত থাকা ঠিক?
এরকম হাজারো ঘটনা আছে কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি নির্দিষ্ট দল করাই অপরাধ ছিল তার মানে কি এদেশের একজন নাগরিক হিসেবে মুক্ত বাতাসে বেঁচে থাকার অধিকার ওই দলের নির্দোষ নিরাপরাধ কর্মীদের নেই?
বাংলায় একটি প্রবাদ আছে পাপ করে বাপ ভাই শোকী-সে পাপে আমি ভুগি!
দেশের অবস্থা কি তাহলে এই দিকেই যাচ্ছে?
আর কত মোবাইল লেন্সের শিকার হবে সাধারণ মানুষ বা নিরীহ নিরপরাধ সাধারণ কর্মী। বর্তমানে একটি গ্রুপ বের হয়েছে যাদের নাম দেয়া হয়েছে ফিটিংবাজ তাদের কাজই হল কে কবে কোন নেতার সাথে হেঁটেছে বাদু একটি ছবি তুলেছে তাই নিয়ে তার পরিবারকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে অর্থ লুটে নেওয়া। একটি সরকার তখনই ব্যর্থ হয় যখন সে সরকার তার দেশের নাগরিককে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়। আমাদের দেশে একটি কালচার আছে ব্যর্থতার দায়ভার কেউ নিতে চায় না। দু একজন যাওয়া উচিত কথা বলে তাদেরকে চারদিক থেকে চেপে ধরা হয় বা হামলা মামলা দিয়ে জীবনকে তছনছ করে দেয়া হয়। আমাদের সাংবাদিক মহলে মাসুদ কামাল ভাই প্রতিনিয়ত সত্য কথাগুলো বলে যাচ্ছেন। এ নিয়ে তিনি বহু হুমকির ও সম্মুখীন হয়েছেন তবুও তিনি থেমে যাননি। কিন্তু পার্থ পক্ষে মাসুদ কামাল ভাইয়ের কথাগুলোকে কেউ কাজে লাগাচ্ছেন না। একজন শ্রদ্ধেয় রাজনীতিবিদ আমার অত্যন্ত পরম শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান সাহেব। তিনিও বরাবরের মতো মানুষের স্বার্থে মানুষের পক্ষে মানুষের জন্য কথা বলছেন। সত্যকে সত্য আর মিথ্যাকে মিথ্যে বলা নিশ্চয়ই অপরাধ নয়। কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় দেশের এই বীর সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান সাহেব ও জীবন হুমকির মুখে দাঁড়িয়ে আছেন। অনেকগুলো টকশোতে বিগত দিনে তিনি বলেছেন এই সত্যি কথা বলে বাসা পর্যন্ত ফিরে যেতে পারবেন কিনা তানি ও তার সংশয়। এই যদি হয় দেশের ঊর্ধ্বতন কম মানুষদের অবস্থা তাহলে সাধারনের কাতারে যারা দাঁড়ানো তাদের অবস্থাটা কি এটা ভাববার মতো বিন্দুমাত্র অবকাশ যেন কেউই পাচ্ছেন না। কৃতজ্ঞতা শিতে ধন্যবাদ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে যারা মব ভায়োলেন্স ঠেকাতে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কিন্তু একটি বাহিনীর কিছু সদস্য তাদের পক্ষে কি এত বড় জনসংখ্যা কে সামাল দেয়া সম্ভব? পারতপক্ষে প্রতিটা দিনই যে যার মত যে যার স্বার্থে যাকে পাশে তাকে বলে দিচ্ছে। এভাবে আর কতদিন চলবে এভাবে চলতে থাকলে যাদের নিয়ে রাজনীতি যাদের নিয়ে দেশ তারাই তো একদিন থাকবে না। আমরা কি তাহলে ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বেষ্টনী দিয়ে ঘেরা এই সোনার বাংলাদেশে শৃঙ্খলা হীন জীবন যাপনের মধ্যেই থাকবো? একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় নাকি এরকম হয়নি রাজাকার আল বদর আল শামস তাঁরাও নাকি এরকম সুযোগ-সন্ধানী ছিল না। ইতিহাস আমাদের কি শিক্ষা দিল? বৈষম্য দূর করতে গিয়ে নতুন আঙ্গিকে নতুন রূপে বৈষম্য নিয়ে এলাম আমরা? মানুষের মানববৃত্তি এতটা হীন ও জঘন্য হয়েছে সামান্য দু চার পাঁচশো টাকার জন্য এ দেশের শিক্ষিত সমাজের একটা অংশ যে কারো জীবন শেষ করে দিতে পারে। কিছু রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীও আছে। তাদেরও তো শিক্ষা-দীক্ষা আছে কিন্তু সেদিকে তারা মোটেও লক্ষ্য রাখছে না। শিক্ষিত সামাজিক মানুষগুলোর একটি অংশ দিনে দিনে পশুতে রূপান্তরিত হচ্ছে।এদেশের প্রিন্ট ইলেকট্রনিক মিডিয়া র একটি বড় অংশের অবস্থা আরো নেক্কারজনক।
অপেশাদার সাংবাদিক,যাদের শিক্ষাদীক্ষা কালির আচড় নাই বললেই চলে তার একটি অংশ। ফেসবুকার ইউটিউবার এদের অনেক বড় একটা অংশের যেন এখন ফাগুন মাস! কোন বেসমেন্ট ছাড়াই তথ্য উপাত্ত ছাড়াই নামি দামি মিডিয়াও প্রকৃত সাংবাদিকদের পিছনে লেগেছে। এত নামি দামি মিডিয়ার ভিতরে কিছু অপেশাদার অর্থ লোভী লোকের কারণে তাদের এতদিনের কষ্টে অর্জিত প্রতিষ্ঠিত ব্যানার টি লোগোটি একদিন ধুলোয় হারিয়ে যাবে! এখনো সময় আছে সময় থাকবে দেশ সমাজ সহ রাজনীতি অর্থনীতি সমাজনীতি সংস্কৃতি প্রিন্ট ইলেকট্রনিক মিডিয়া থেকে এসব কুলাঙ্গারদের বেছে বেছে বের করে দিয়ে আইনের আওতায়ন আনতে হবে। প্রশ্ন হল এই মুহূর্তে সাহসী দায়িত্ব নেবে? কাউকে না কাউকে তো নিতেই হবে। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি যে মায়ের সুসন্তান এ দায়িত্বটি নেবে ইতিহাস তার নাম সারা জীবনের জন্য স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখবে।
বাংলাদেশ ভালো থাকুক ভালো থাকুক বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ যারা দুবেলা দুমুঠো খাওয়ার জন্য প্রতিদিন সকালবেলা লোকাল বাসের লাইন ধরে সারাদিন পরিশ্রম করে দৌড়াতে দৌড়াতে ঠেলে কোনমতে গাড়িতে ওঠে বাড়িতে ফিরে। শুভকামনা তাদের জন্য। শুভকামনা এক লাখ ৬৬ হাজার গ্রামে বসবাসরত সাধারণ গ্রামবাসীর প্রতি। যারা সূর্য ওঠার আগে ঘুম থেকে উঠে মাঠে গিয়ে সোনার ফসল ফলায় দেশের মানুষের খাবার জন্য অন্নের জন্ম দেয়।শস্য সবুজে মাঠকে পরিপূর্ন করে।আমিষের ঘাটতি মেটাতে দিনরাত পরিশ্রম করে নালা পুকুর খাল বিলকে পরিপূর্ণ করে। সকালবেলা জাল নিয়ে নদীতে যায় তাদের জন্য। দালালহীন একটি বাংলাদেশ পুনর্গঠন এখন সময়ের দাবি।