গনঅভ্যুত্থানে আশ্রিতদের তালিকা প্রকাশ করলো সেনাবাহ


গণঅভ্যুথ্যানে আশ্রিতদের তালিকা,আইএসপিআর
গণঅভ্যুত্থানের পরে সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করেছে সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাতে নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত বছর জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কতিপয় কুচক্রী মহলের তৎপরতায় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়। ফলশ্রুতিতে, সরকারি দপ্তর, থানাসমূহে হামলা, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উপর আক্রমণ ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, মব জাস্টিস, চুরি, ডাকাতিসহ বিবিধ বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। এ ধরনের সংবেদনশীল ও নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে দেশের নাগরিকদের মনে নিরাপত্তাহীনতার জন্ম নেয়।
এমতাবস্থায়, ঢাকাসহ দেশের প্রায় সকল সেনানিবাসে প্রাণ রক্ষার্থে কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নাগরিকগণ আশ্রয় প্রার্থনা করেন। উদ্ভূত আকস্মিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সেনানিবাসে আশ্রয়প্রার্থীদের পরিচয় যাচাই বাছাই করার চাইতে তাদের জীবন রক্ষা করা প্রাধান্য পেয়েছিল। এ প্রেক্ষিতে, ২৪ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ৫ জন বিচারক, ১৯ জন অসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা, ৫১৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ বিবিধ ১২ জন ও ৫১ জন পরিবার পরিজন (স্ত্রী ও শিশু) সহ সর্বমোট ৬২৬ জনকে বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় প্রদান করা হয়েছিল
বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করে এবং ১৯৩ জনের একটি তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করে, যার মধ্যে ৪৩২ জন সাধারণ পুলিশ সদস্য ও ১ জন এনএসআই সদস্য বাদে ১৯৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। সেনাবাহিনী বলছে, এসব ব্যক্তির জীবন রক্ষার জন্য সাময়িক আশ্রয় দেয়া হয়েছিল এবং এটি একটি সম্পূর্ণ মানবিক পদক্ষেপ ছিল।
এদিকে, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এসব প্রচারণার উদ্দেশ্য হলো জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা এবং সেনাবাহিনীর প্রতি আস্থাহীনতা তৈরি করা। সেনাবাহিনী এই ধরনের অপপ্রচারে ক্ষুব্ধ এবং জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আরো বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা এবং আস্থার সঙ্গে জাতির পাশে থাকবে।’
সেনাবাহিনী জনগণকে আহ্বান জানিয়েছে, বিভ্রান্তি ও অপপ্রচার থেকে দূরে থাকতে এবং প্রকৃত তথ্য সম্পর্কে অবগত থাকতে। এমন পরিস্থিতিতে, সেনাবাহিনী এই ঘটনাকে একটি মানবিক ত্যাগ হিসেবে তুলে ধরে দেশের সার্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
ডেস্ক/এএস