মন্ত্রিসভায় রদবদল আসছে

।।আজ সারাদিন ডেস্ক।।
চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গত ১১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভায় ৩৭ জন সদস্য শপথ নেন। পরে গত ২ মার্চ দ্বিতীয় দফায় আরও ৭ জন প্রতিমন্ত্রী যুক্ত হন মন্ত্রিসভায়। এতে করে মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৪ জনে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পাস হতে পারে ৩০ জুন। এরপর যেকোনো দিন মন্ত্রিসভায় রদবদল হতে পারে। কোনো কোনো মন্ত্রণালয়ে যুক্ত হতে পারে নতুন মন্ত্রী. প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী অথবা বর্তমান মন্ত্রীদেরও হতে পারে মন্ত্রণালয় রদবদল। এ তথ্য সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে।
সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সূত্র জানায়, বর্তমান মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীসহ সদস্য সংখ্যা রয়েছে ৪৪ জন। চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীসহ ৩৭ সদস্য শপথ নেন। এর মধ্যে পূর্ণ মন্ত্রী ২৫ জন। প্রতিমন্ত্রী ১১ জন। পরে গত ২ মার্চ নতুন সাত প্রতিমন্ত্রী শপথ নিলে প্রতিমন্ত্রীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮ জনে। সব মিলিয়ে মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা ৪৪ জন। যদিও গত মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা ছিল ৪৯। সে তুলনায় এখন আরও ৫ জন মন্ত্রিসভার সদস্য বাকি রয়েছেন। গত মন্ত্রিসভায় তিন উপমন্ত্রী থাকলেও বর্তমান মন্ত্রিসভায় কোনো উপমন্ত্রী নেই। ফলে কয়েকজন উপমন্ত্রী যুক্ত হতে পারেন। আবার কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী থাকলেও পূর্ণ মন্ত্রী নেই। মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণে এ বিষয়গুলো বিবেচনায় আসতে পারে। এ ছাড়া আরও কয়েকজনকে মন্ত্রী করা হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে হোম ওয়ার্ক করছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বর্তমান মন্ত্রিসভার কোনো মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে অবজারভেশনে রেখেছেন।
অবজারভেশনে কোনো কোনো মন্ত্রি-প্রতিমন্ত্রীর কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্ট নন প্রধানমন্ত্রী। তিনি কোনো মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ না দিলেও তাদের মন্ত্রণালয় রদবদল করার কথা ভাবছেন। এর মধ্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে নতুন মন্ত্রী যুক্ত হতে পারে। রদবদল হতে পারে অর্থ মন্ত্রণালয়ে। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে আসতে পারে রদবদল। ভিন্ন কোনো মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীকে রদবদল করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যুক্ত করা হতে পারে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে হতে পারে রদবদল। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আসতে পারে রদবদল। একই সঙ্গে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়েও একজন প্রতিমন্ত্রী যুক্ত হতে পারেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় যেহেতু অনেক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় সে কারণে একজন প্রতিমন্ত্রী যুক্ত হতে পারেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আসতে পারে রদবদল। শিল্প মন্ত্রণালয়েও আসতে পারে রদবদল। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে একজন প্রতিমন্ত্রী যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে একজন পূর্ণমন্ত্রী দেওয়া হতে পারে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে পরিবর্তন আসতে পারে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একজন পূর্ণমন্ত্রী যুক্ত হতে পারে অথবা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আসতে পারে রদবদল। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে একজন মন্ত্রী যুক্ত হতে পারেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মন্ত্রিসভায় যারা আসবেন তাদের মধ্যে তরুণদের প্রাধান্য দেওয়া হতে পারে। যারা দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ, সৎ, শিক্ষিত, দক্ষ তাদেরই মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসা হবে। এটিই হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চমক। তবে তিনি যাকে ভালো মনে করবেন তাকেই মন্ত্রিসভায় রাখবেন। এর মধ্যে যারা আলোচনায় রয়েছেন তারা হলেন-আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, নুরুল ইসলাম নাহিদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. মো. আবদুর রাজ্জাক, শাহজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের এমপি আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাবেক গণপূর্ত মন্ত্রী এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ১৪ দলের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, আহমদ কায়কাউস, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, আ স ম ফিরোজ, নুরুন্নবী চৌধুরী, আসাদুজ্জামান নূর, মো. আবদুস সবুর, তানভীর শাকিল জয়, মাশরাফি বিন মর্তুজা, এ কে এম এনামুল হক শামীম, সাজ্জাদুল হাসান।
সরকারের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা যতটুকু শুনেছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভায় রদবদল আনছেন। তিনি এ বিষয়টি নিয়ে হোম ওয়ার্ক করছেন। এমনকি কাকে কাকে মন্ত্রিসভায় যুক্ত করবেন, এমন একাধিকজনের নামের লিস্ট তৈরি করেছেন তিনি। তবে চলতি মাসে হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী যখন চাইবেন, তখন হতে পারে। কারণ এটি সম্পূর্ণ তার এখতিয়ার। এর বেশি কিছু বলতে পারছি না।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, মন্ত্রিসভায় কোনো রদবদল আসছে কি না এমন খবর আমার জানা নেই। আর যদি রদবদল হয়ও সেটি একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এখতিয়ার। তিনি যদি মনে করেন, মন্ত্রিসভায় রদবদল করতে পারেন। তিনি চাইলে কেউকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দিতে পারেন। আবার যুক্তও করতে পারেন। এটি সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর বিষয়।