বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২৫ অপরাহ্ন

গার্মেন্টস শ্রমিকদের রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা-নারী বান্ধব কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করার দ্বাবি উত্থাপন

Reporter Name / ১৭১ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪

আজ ১লা মে-২০২৪ইং রোজ বুধবার সকাল ০৯:৩০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস-২০২৪ উপলক্ষে গার্মেন্টস শ্রমিকদের রেশনিং ব্যবস্থা চালু – অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করার দাবীতে গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন ও ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার এর যৌথ উদ্যোগে শ্রমিক সমাবেশ ও লাল পতাকা মিছিল অনুষ্ঠিত।

সমাবেশে গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশর ও ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার এর সভাপতি সুলতানা বেগম এর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইলিয়াস, সহ-সভাপতি মিসেস সুইটি, সেলিনা হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ফরিদ উদ্দীন, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রোজিনা আক্তার সুমি, নারী কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমরিন হোসাইন এ্যানি, দপ্তর সম্পাদক রাবেয়া ইসলাম, আশুলিয়া থানা কমিটির সভাপতি ইউসুফ শেখ, আঞ্চলিক কমিটির মোঃ তাহেরুল ইসলাম, মোঃ সুমন হোসেন মোল্লা, মিস্টার শেখ, মোঃ ফারুক হোসেন, নাসরিন আক্তার,শাবনুর,অঞ্জলী, স্বপ্না আক্তার, নুরজাহান, জোসনা বেগম, সালমা বেগম, রোকসানা ও আমেনা প্রমুখ।
এছাড়াও সংহতি বক্তব্য রাখেন নাগরিক উদ্যোগ এর প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর শান্তানা আইয়ুব।
সভাপতির বক্তব্য ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতানা বেগম বলেন, বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের ঐতিহাসিক দিন আজ। শ্রমিকদের আত্মত্যাগের এই দিনকে সারা বিশ্বে একযোগে ‘মহান মে দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে। ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমজীবী মানুষ নিপীড়নের বিরুদ্ধে গড়ে তুলেছিলেন দুর্বার আন্দোলন।১৩৮ বছর ধরে দুনিয়াব্যাপী শ্রমিকেরা ন্যায্য অধিকার আদায় ও শোষণ নিপীড়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই সংগ্রাম করে আসছে। আমাদের দেশে এখনো শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, কর্মঘণ্টা ও নিরাপদ কর্মস্থলের জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে। একজন নারী শ্রমিক শ্রম আইন অনুযায়ী সব অধিকারের সমান অংশীদার হলেও বাস্তব অবস্থা ভিন্ন। নারী শ্রমিক অধ্যুষিত গার্মেন্টস ও অন্যান্য ক্ষুদ্র্র শিল্প ও অপ্রাতিষ্ঠানিক সেক্টরে স্বল্প মজুরি, খন্ডকালীন নিয়োগ, যখন-তখন ছাঁটাই ও অধিক শ্রমঘণ্টা কাজ করানো হয়। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নারী শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্র থেকে সাপ্তাহিক ছুটি, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ছুটি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পায় না।
বক্তাগন বলেন অস্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ, সুপেয় পানির অভাব, যৌন হয়রানিসহ অনেক সমস্যা তাঁদের প্রতিনিয়ত ভোগ করতে হয়। সমকাজে সমমজুরি ও নারী-পুরুষের মজুরি বৈষম্য তো রয়েছে। ভাত, কাপড়, মাথা গোঁজার ঠাঁই, শিক্ষা ও চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া প্রত্যেক মানুষের মৌলিক অধিকার হলেও আমাদের দেশের শ্রমজীবী মানুষের বিশাল অংশ এখনো এই অধিকার থেকে বঞ্চিত।
কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় শ্রমিকের মৃত্যু হলে বা কোনো শ্রমিক গুরুতর আহত বা পঙ্গু হলে তাঁদের পরিবার পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে পড়ে। কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় নিহত বা গুরুতর আহত হয়ে কর্মক্ষমতা সম্পূর্ণ নষ্ট হলে, আইএলও কনভেনশন ১২১ মানদন্ড অনুযায়ী তাঁকে আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন, কাজে ফেরার ব্যবস্থা করতে হবে।
শ্রমিককর্মচারী তথা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বিশেষ করে গার্মেন্টস, নির্মাণ, পরিবহন, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, চাশ্রমিক, রিকশাশ্রমিক, হকার, চাতাল, ওয়েল্ডিং, গৃহহশ্রমিক, বিউটি পার্লার, হিজরা ও অটো রাইস মিল শ্রমিকদের জন্য রেশনিং প্রথার মাধ্যমে স্বল্প মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, যেমন চাল, ডাল,তেল, চিনি সরবরাহ করতে হবে। এই সংকট নিরসনের জন্য বাজারদরের সঙ্গে সংগতি রেখে মহার্ঘ ভাতা প্রদান করা আজ অত্যন্ত জরুরি।
শ্রমিককর্মচারীদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কারখানা ও শিল্পাঞ্চলভিত্তিক আবাসন, হাসপাতাল ও বিদ্যালয় স্থাপন করে সেখানে স্বল্প মূল্যে অথবা বিনা মূল্যে বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। কর্মস্থলে সব ধরনের নির্যাতন ও সহিংসতা রোধে আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুস্বাক্ষরও বাস্তবায়ন করতে হবে।
সমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য মিছিল হাইকোর্ট মোড়, তোপখানা রোড, পল্টন মোড় প্রদক্ষিন করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসে সমাপ্ত হয়।
শ্রমজীবি মানুষের দাবী
(১) গার্মেন্টস শ্রমিকদের রেশনিং ব্যবস্থা চালু কর। (২) ২০২৩ সালে ঘোষিত মজুরী বাস্তবায়ন কর। (৩) সকল শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি কর। (৪) অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত কর।(৫) ৬ মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটির আইন কর। (৬) জাতীয় বাজেটে শ্রমিকদের জন্য সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ চাই। (৭) আইএলও কনভেনশন ১০২, ১৮৯ ও ১৯০ অনুস্বাক্ষর কর।(৮) শ্রমিক স্বার্থবিরোধী কালো আইন বাতিল কর।(৯) নিরাপদ কর্মস্থল ও কর্মপরিবেশ নিশ্চিত কর।(১০) আউটসোর্সিং প্রথা ও ছাঁটাই-নির্যাতন বন্ধ কর।(১১) অবিলম্বে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি কমিশন গঠন কর।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরও সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর